ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল, স্বাভাবিক হচ্ছে বেনাপোল চেকপোস্ট

প্রথম সময় ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ‘করোনা ভাইরাস’ সংক্রমণ ঠেকাতে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টযাত্রী পারাপার বন্ধের আট মাস পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস। বর্তমানে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে নতুন মেডিক্যাল ভিসা ও পুরানো বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশিরা ভারত যাতায়াত করছেন। এ ছাড়া ভারত থেকেও ইমপ্লয়মেন্ট ও বিজনেস ভিসায় প্রতিদিন যাত্রীরা আসছেন বাংলাদেশে।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব বলেন, ভারত সরকার গত ১৩ মার্চ বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির পর চলতি মাস থেকে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করেছে। বর্তমানে কভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে নতুন মেডিক্যাল ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা ও পুরানো বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশিরা ভারত যেতে পারবেন। আর ভারত থেকে ইমপ্লয়মেন্ট ও বিজনেস ভিসায় বাংলাদেশে আসতে পারবেন। তবে কূটনৈতিক ভিসায় পারাপার কখনো বন্ধ হয়নি।

থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে এ পথে ভারত থেকে আগত বিদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। মেডিক্যাল টিমের ইনচার্জ মেডিক্যাল অফিসার সুজন সেন বলেন, যাতায়াতের জন্য প্রত্যেকের কাছে কভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। এরপরও বাংলাদেশে আসা সব যাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। চেকপোস্টের স্ক্যানারটি অত্যন্ত আধুনিক। এটা বাইরে থেকে প্রতিটি যাত্রীর তাপমাত্রা অটোমেটিক নির্ণয় করতে পারে। এ ছাড়া যার তাপমাত্রা যত বেশী সেখানে তার শরীরের উপর ‘হাই লেখা’ দেখায়।

চলতি বছরের ১৩ মার্চ ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় পারাপার বন্ধ হলে বাংলাদেশে আটকে পড়ে ভারতীয়রা। পরবর্তীতে পাঁচ মাস পর প্রথমে বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে নেয় তারা। বাংলাদেশিদের ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন গ্রহণ না করায় বেকায়দায় পড়েন এদেশের ব্যবসায়ী ও ওই দেশে চিকিৎসা গ্রহন করা রোগীরা। তাদের কথা বিবেচনায় নভেম্বর থেকে মেডিক্যাল আর বিজনেস ভিসায় যাতায়াতে সুযোগ দিয়েছে ভারত সরকার। এদিকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলেও শুরু হয়নি ভ্রমণ (টুরিস্ট) ভিসায় যাতায়াত। এখন যারা ভারত যাচ্ছেন তাদের ৯০ শতাংশ মেডিক্যাল ভিসায়। টুরিস্ট ভিসা চালু হলে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে দুদেশের চেকপোস্ট এলাকায়।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ক্যান্সারের রোগী। দুবছর ধরে ভেলরে চিকিৎসা হচ্ছি। করোনার কারণে এক বছর হলো ডাক্তার দেখাতে পারিনি। নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় চিকিৎসা করাতে ভারত যাচ্ছি।

সুমি খাতুন বলেন, মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাচ্ছি। মেডিক্যাল ভিসার মেয়াদ ৩ মাস থেকে ৬ মাসের জন্য দিলেও এ ভিসায় মাত্র একবার ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। এতে কতটুকু প্রয়োজন মিটবে তা নিয়ে সংশয়ে আছি।

স্বাভাবিক সময়ে এ পথে প্রতিদিন ১০ হাজার পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত করলেও গত তিন দিনে পারাপার হয়েছে ১ হাজার ৪২৯ জন। শনিবার ভারত গেছে ২৬৫ জন আর এসেছে ১৬২ জন। শুক্রবার গেছে ৩৫৬ জন আর এসেছে ১৬১ জন। বৃহস্পতিবার গেছে ২৬৬ জন এবং দেশে এসেছে ১৬২ জন। ভ্রমন ভিসা চালু না হওয়া পর্যন্ত যাত্রী যাতায়াত বাড়ার সম্ভবনা নেই বলে মনে করেন ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *