আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে অর্থ দাবি, কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা

প্রথম সময় ডেস্ক:

কুমিল্লার বরুড়ায় আপত্তিকর ছবি বাবা-মায়ের মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে ব্লাকমেইল করে অর্থ দাবি করায় লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যা করেছে এক কলেজ ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের সিংগুর গ্রামে।

কলেজ ছাত্রী সিংগুর গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াছ মিয়ার মেয়ে মারিয়া আক্তার গাজী (১৯)। সে চট্টগ্রাম ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।  গত ৮ জুন সকালে ওই কলেজ যাত্রী আত্মহত্যা করে। এরপর তার পরিবার গত ১১ জুন বরুড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মারিয়া তাদের পার্শ্ববর্তী খলারপাড় গ্রামের জাবেদ মজুমদার নামে এক যুবকের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তাদের প্রেমটি গড়ে উঠে ২ বছর পূর্বে। জাবেদ মজুমদার খলারপাড় গ্রামের মোস্তফা মজুমদারের ছেলে। প্রেমের ঘটনাটি লোকমুখে জানাজানি হলে কলেজছাত্রী মারিয়ার পরিবার ওই যুবকের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ছেলেকে সাবধান করার জন্য বলেন। এ নিয়ে দুইপক্ষের শালিসেও সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু ওই যুবক ওই কলেজ ছাত্রীকে বিভিন্ন কায়দায় সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাপ দেওয়া শুরু করে। মারিয়া অস্বীকৃতি জানালে তাকে ব্লাকমেইল করা শুরু করে। সম্পর্ক না রাখলে গোপন ক্যামরায় ধারণকৃত আপত্তিকর ছবি মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে ফেসবুকে প্রকাশের হুমকি দেয়। এছাড়া বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে।

ওই কলেজ ছাত্রীর মা সাদিয়া আক্তার জানান, আপত্তিকর ছবিগুলো মারিয়াকে পাঠানোর পর তার বাবার ফেসবুক মেসেঞ্জারেও পাঠায় ওই লম্পট যুবক। শুধু তাই নয়, মারিয়ার বড় ভাই এবং আমাকেও ওই ছবিগুলো পাটিয়ে বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তার ধারণকৃত ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। এসব কথা আমার মেয়ে জানতে পেরে লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যা করে।

তিনি আরও জানান, মেয়েকে হত্যার বিচার চাই। বরুড়া থানায় লম্পট যুবক জাবেদ, তার বাবা মোস্তফা মজুমদার ও তিন ভাইসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলায় দায়ের করেছি। মেসেঞ্জারের জাবেদের হুমকি ও কথোপকথনের সব স্কিনশট থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরুড়া থানার এস আই আনিছুর রহমান জানান, থানায় মামলা করার পর আমরা একাধিকবার ঘটনা তদন্ত করতে মাঠে গিয়েছি। আসামিদের আটক ও গ্রেফতার করতে কাজ করছি। তবে প্রধান আসামিসহ সবাই পালাতক রয়েছে। তারপরও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *