খুলনাঃ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আম জনতার চাপ বাড়ছে শেখ সোহেলের উপরে

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

খুলনাতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ক্রমেই চাপ বাড়ছে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেলের উপরে। এই চাপ আসছে দলের ভেতর থেকেই, দলের বাইরে থেকেও। শেখ সোহেলের মানবিকতা, ব্যক্তিগত ব্যবহার, জনসম্পৃক্ততা, নেতা কর্মীদের প্রতি অফুরান ভালবাসা, মানুষকে সম্মান দেয়া, নেতা কর্মীদের কথা ধৈর্য দিয়ে শোনা, গুরুত্ব দেয়া, তাৎক্ষনিক সমাধান করে দেয়া, অসহায়দের প্রতি দানবীর আচরণ, মসজিদ- মাদ্রাসা, এতিম খানাতে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা সব মিলিয়ে শেখ সোহেল আজ খুলনাতে অনন্য এক উচ্চতায়। সহজ, সরল, সাবলীল আচরণে শেখ সোহেল জনমনে আজ আস্থার প্রতীকে পরিনত। পরিচ্ছন্ন, স্পষ্টবাদী রাজনীতিক হিসাবে সব মহলেই সমাদৃত।সবার ভালবাসায় সিক্ত একজন মানুষ। বৃদ্ধ, যুবক থেকে কিশোর পর্যন্ত সব শ্রেণীর নারী, পুরুষ শেখ সোহেলের কাছে অবাধে যাতায়াত করতে পারেন, কথা বলতে পারেন মন খুলে, এটাই আজ বাস্তবতা।

শত ব্যস্ততায়ও শেখ সোহেল পরিচিত, অপরিচিতদের ফোন ধরেন, ব্যস্ততায় না ধরলে পরে কল ব্যাক করেন।
প্রধানমন্ত্রীর আপন চাচাতো ভাই, সেই সুত্রে রাজ পরিবারের সদস্য হওয়া সদস্য সত্ত্বেও শেখ সোহেলের মনে নুন্যতম অহংকার নেই। সদালাপী, আড্ডাবাজ, নির্মোহ, প্রাণবন্ত এক তরুন।দলের নেতা কর্মীদের ভাষায়, “প্রাণের অনুভূতি ভালবাসার আরেক নাম শেখ সোহেল”।

বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলালকে দিয়েই এই পরিবার আজ খুলনাবাসীর মন জয় করেছে। ৮০ র দশক থেকেই খুলনার রাজনীতিতে শেখ হেলালের যাত্রা শুরু। ধাপে ধাপে শেখ হেলাল আজ দলকে সেখানে টেনে এনেছেন। ৯০ এর দশকে বাগেরহাটে শেখ হাসিনার ছেড়ে দেয়া আসনে উপ নির্বাচনে এমপি হবার মধ্য দিয়ে অসংখ্য নেতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এমপি, মন্ত্রী, মেয়র, সভাপতি, সাধারন সম্পাদক কিংবা অন্য পেশাতেও নেতা বানিয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চল ছাড়িয়ে শেখ হেলাল আজ জাতীয় রাজনীতিতে শেখ হাসিনার পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে আছেন। শেখ হেলালের পরে শেখ জুয়েল আজ খুলনা সদর আসনের এমপি।

শেখ হেলালের ছেলে শেখ তন্ময়ও আজ বাগেরহাট সদর আসনের এমপি। পরিবারকে ঘিরেই আজ খুলনার রাজনীতি নিয়ন্ত্রন হচ্ছে। খুলনাবাসীর সুখ দুঃখ আর শেখ পরিবার আজ একই সুত্রে গাঁথা। যেনও যৌথ এক পরিবার। যৌথ এই পরিবারের নেপথ্য নায়কই এখন শেখ সোহেল।
শেখ সোহেল দীর্ঘদিন ধরে বিসিবির পরিচালক। এবার যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য।

দলের রাজনৈতিক দায়িত্ব পেয়েছেন এর পরে শেখ সোহেল কি হবেন? এই প্রশ্ন এখন জেলা ও শহর জুড়ে। তিনি কি পরবর্তীতে মেয়র পদে প্রার্থী নাকি এমপি? এটাই এখন টক অব দ্যা খুলনা। দলের একটি বৃহৎ অংশই চান শেখ সোহেল খুলনাতে মেয়র নির্বাচন করুক। মেয়র পদে বর্তমানে আছেন, দলের প্রবীণ নেতা, খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক। এবার নিয়ে তিনি দুই দুবার মেয়র পদে। খুলনা তথা দেশেরর রাজনীতিতে খালেক সৌভাগ্যবান এক তারকা রাজনীতিক।

৭০ এর দশকে কমিশনার থেকে তার যাত্রা শুরু। মাঠের রাজনীতিতে তিনি বরাবরই আন প্যারালাল। আর সেই কারনেই দলের সাধারন সম্পাদক, সভাপতি হয়েছেন কয়েক দফায়।
৯০ এর দশকে সফল ত্রান প্রতিমন্ত্রী। দুই দফায় প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় মেয়র। তার স্ত্রীও তার অবর্তমানে দুই দফায় এমপি, পরে উপমন্ত্রী হয়েছেন। গত ২৫ বছর ধরেই নিঃসন্তান খালেক দম্পতি রাজনীতির ক্ষমতায় সরাসরি সম্পৃক্ত। কর্মঠ, পাহাড়সম ব্যক্তিত্বের অধিকারী মেয়র খালেক সময়ের বাস্তবতায় দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ৮০ র দশকের ঘের বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে গণ মানুষের নেতা হয়েছিলেন তালুকদার আব্দুল খালেক।

আগামীতে মেয়র পদে এসব কারনেই শেখ সোহেলকে চাচ্ছেন দলের বৃহৎ অংশ। চলমান করোনাতে শেখ সোহেল প্রথম থেকেই খুলনাবাসীর পাশে আছেন। শহরের ধনাঢ্য অনেকেই আছেন কিন্তু তাদেরকে করোনাতে আর্থিক সহযোগিতা কিংবা খাবার দাবার নিয়ে দেখা যায়নি অসহায়দের পাশে। অসহায়, দুঃস্থ ছাড়াও মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জেন, অন্য বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষকে শেখ সোহেল নীরবে নিভৃতে সাহায্য, সহযোগিতা সব সময়েই করে আসছেন। বাসার পাশের বলাকা ক্লাবকে এতিম খানা বানিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ময়লা পোতা মোড়ের মসজিদকে দৃষ্টিনন্দন মসজিদে রুপান্তর করেছেন যা এখনও চলমান। শহরের এমন কোনও মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা নেই যেখানে শেখ সোহেলের সহযোগিতা নেই। শেখ সোহেল শহর ধরেই আজ প্রশংসিত, নন্দিত তারকা রাজনীতিকে পরিনত হয়েছেন সল্প সময়ের মধ্যেই।

সে কারনেই মেধাবী তরুন শেখ সোহেলকে সবাই ক্ষমতার কোনও না কোনও জায়গায় দেখতে চাচ্ছেন। সেটা মেয়র কিংবা এমপি পদে। অন্যদিকে, এমপি হিসাবে অনেকেই খুলনা- ১ আসনের জন্য শেখ সোহেলের কথা বলছেন। স্থানীয় এমপি পঞ্চানন বিশ্বাস বয়সের কারণে আগামীতে আর রাজনীতি করবেন না এটা ওপেন সিক্রেট। আগামীতে শেখ সোহেলকে সেখানে এমপি হিসাবে দেখতে চান দলের নেতা কর্মীরা। শেখ সোহেল দাকোপ- বটিয়াঘাটা নিয়ে খুলনা- ১ আসনেও চলমান করোনাতে ত্রান তৎপরতা চালানোয় অনেকেই তেমনটি ইঙ্গিত করেছেন।

প্রথম সময়ের অনুসন্ধানে এসব উঠে এসেছে, এমন জানিয়ে শেখ সোহেলকে প্রশ্ন করলে স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে নিজ অফিসে করোনাতে আক্রান্ত হবার আগে বলেছেন, অনেক আলোচনা আমাকে নিয়ে, এটা আমি জানি, বাট আমি কি করব, সেটাই আমি জানিনা। আপা আমাকে নিয়ে দায়িত্ব দিলেও আছি, না দিলেও আছি। তিনি আমাকে যুবলীগে কমিটিতে এবার প্রেসিডিয়াম সদস্য করেছেন, তিনিই জানেন, আমাকে কোথায় কিভাবে রাখবেন। সেক্ষেত্রে আমি আগাম কিছুই বলতে পারব না, বলা উচিতও না, বিশ্বাস করুন, আমি আসলেই জানিনা, এভাবেই উত্তর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতির গুড বুকে থাকা আপন চাচাতো ভাই, ঘাত প্রতিঘাতে কাটিয়ে উঠা খুলনার স্বপ্নদ্রষ্টা, প্রতিশ্রুতিশীল, উন্নয়নের রুপকার এক টগবগে তরুনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *