৩০ বছরে উষ্ণতম দিনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ

অনলাইন ডেস্কঃ

বিশ্বে চরম উষ্ণ দিনের সংখ্যা গত তিন দশকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ১৯৮০-এর দশকের চেয়ে বর্তমানে দ্বিগুণ সংখ্যক উষ্ণতম দিন মোকাবেলা করছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের বাসিন্দারা। বিবিসির এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

কেবল তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকা দিনগুলোকে এখানে চরম উষ্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮০ এর দশক থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়া দিনের সংখ্যা ছিল বছরে মাত্র ১৪টি। ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬টি।

শুধু তাই নয়, এ সময়ে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার দিনও বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। বছরে অন্তত ১৪ দিনের বেশি এ ধরনের দিন বেড়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত পরিবর্তন ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক ড. ফ্রেডেরিক অট্টো বলেন, ‘জ্বালানী তেল পুড়ানো এ উষ্ণতা বাড়ার জন্য শতভাগ দায়ী।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ তাপমাত্রা মানবজাতি ও প্রকৃতির জন্য ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে; এটা ভবন, সড়ক ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্যও সমস্যার কারণ হতে পারে।

সচরাচর মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় দেশগুলোতে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠতে দেখা যায়। তবে এবার গ্রীষ্মে ইতালিতে রেকর্ড ৪৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও কানাডায় ৪৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ইতালি ও কানাডায় এতে বহু মানুষের মৃত্যুও হয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব জিওগ্রাফি এন্ড দ্য এনভাইরমেন্ট বিভাগের জলবায়ু গবেষক ড. সিহান লি বলেন, ‘আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যত দ্রুত আমরা (কার্বন) নিঃসরণ বন্ধ করবো, ততই ভালো।’

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক এলাকা চাষবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। কমে গেছে বৃষ্টিপাত। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কৃষকরা পড়ছেন বেশ ক্ষতির মুখে।

শেখ কাজেম আল কাবি একজন ইরাকি কৃষক। মধ্য ইরাকে তার অনেক ফসলি জমি আছে, যেগুলোতে গমের পাতা বাতাসে দুলতো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখন সেসব জমি শুষ্ক ও বিরান। দেখে মনে হয় যেনো দীর্ঘ মরুভূমি।

কৃষক আল কাবি বলেন, ‘এসব জমি ছিল সবুজ; কিন্তু এখন তা আর নেই। এখন এগুলো মরুভূমি ও খরার কবলে।’ তিনি জানান, এ কারণে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন প্রায় সব কৃষক।

এ গল্প শুধু আল কাবিরই নয়, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে কোটি কৃষকের ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *